লিবিয়া প্রবাসীর কষ্টার্জিত প্রায় তিন কোটি টাকার সহায়-সম্পদ, বাড়ি, গাড়ি ও স্বর্ণালংকার প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মাদারীপুরের এক নারীর বিরুদ্ধে। অভিযোগটি করেছেন নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার হাড়িভাঙ্গা গ্রামের প্রবাসী রানা লস্কর ও তার পরিবার।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, রানা লস্কর ২০২৩ সালে মাদারীপুর পৌরসভার পাকদী এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের আতাউর রহমানের মেয়ে নাজনীন আক্তার স্নিগ্ধাকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর স্ত্রীকে লিবিয়াতেও নিয়ে যান তিনি। স্ত্রীর প্রতি গভীর ভালোবাসা ও বিশ্বাসের কারণে তাকে উপহার হিসেবে দেন দুটি প্রাইভেটকার, স্বর্ণালংকারসহ বিপুল পরিমাণ সম্পদ।
পরবর্তীতে স্ত্রী নাজনীন আক্তার স্নিগ্ধার নামে দলিল করে দেন ঢাকার মিরপুর-১৪, ইব্রাহিমপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ রোড এলাকায় পাঁচতলা বিশিষ্ট দুটি ফ্ল্যাট বাড়ি। কিন্তু এরপর থেকেই দাম্পত্য জীবনে অশান্তি দেখা দেয়। অভিযোগ রয়েছে, স্বামীকে নানা অজুহাতে হয়রানি ও তালবাহানা করতে থাকেন স্নিগ্ধা।
একপর্যায়ে প্রবাসী রানা লস্কর বাড়ি বিক্রির কথা তুললে, স্ত্রী তার প্রতি অসহযোগিতা শুরু করেন এবং সম্পর্ক অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে সব সম্পত্তি নিজের নামে দলিল করিয়ে ২০২৫ সালের ১২ অক্টোবর একতরফা ডিভোর্স পাঠান স্নিগ্ধা। এরপর তিনি প্রবাসীর পরিবারকে ঢাকার বাড়ি থেকে বের করে দেন। এতে ভেঙে পড়েছেন রানা লস্কর ও তার পরিবার।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, নাজনীন আক্তার স্নিগ্ধা ও তার ভাই সোহাগ সিপাহী শুধু রানা লস্করের সঙ্গেই নয়, এলাকার আরও বহু মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।
একই এলাকার রুনা, সিরাজ, পাবেল ও আবুল হোসেন বলেন, স্নিগ্ধা মাদারীপুরের মেয়ে হয়েও অন্য জেলার প্রবাসী ছেলেকে বিয়ের ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করেছে। প্রায় তিন কোটি টাকার সম্পদ আত্মসাৎ করেছে সে। এমনকি আমাদের সাথেও বিদেশে পাঠানোর কথা বলে টাকা নিয়েছে।
রুমা আক্তার নামে এক নারী জানান, একসময় স্নিগ্ধার পরিবারের খাবার জোটানো কষ্টকর ছিল। আমার মাধ্যমেই রানার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তখন আমি জানতাম না, এরা এত বড় প্রতারক পরিবার। এখন সরকার ও প্রশাসনের কাছে এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।
ভুক্তভোগী প্রবাসী রানা লস্কর বলেন, স্ত্রীকে ভালোবেসে যা কিছু ছিল সব দিয়েছি। কিন্তু সে আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে সব সম্পদ আত্মসাৎ করেছে। এমনকি আমার বাবা-মাকেও বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আমি প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার চাই।
অভিযুক্ত নাজনীন আক্তার স্নিগ্ধার সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আদিল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআর
Wednesday 29 October 2025
somoyerkonthosor - 3 days ago
বিয়ের ফাঁদে ফেলে প্রবাসীর ৩ কোটি টাকার সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগ
⁞
