চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালনকে ঘিরে চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা সমবায় অফিসের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সমবায় সমিতির কাছ থেকে অর্থ নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, যারা বেশি অনুদান দিয়েছেন, তাদেরকেই সম্মাননা ও বক্তব্যের সুযোগ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন অংশগ্রহণকারীরা।শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা পরিষদ হলরুমে আলোচনা সভা, র্যালি ও সম্মাননা প্রদানের মধ্য দিয়ে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত হয়।
জানা গেছে, বাঁশখালীতে ৫০টির অধিক সমবায় সমিতি রয়েছে। জাতীয় সমবায় দিবস পালন উপলক্ষে প্রতিটি সমিতির কাছ থেকে নির্ধারিত হারে চাঁদা নেওয়া হয়। এর মধ্যে উত্তর-পশ্চিম গণ্ডামারা লবণ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি, আওয়ামী লীগ নেতা আবু আহমদের কাছ থেকে নেওয়া হয় ৫০ হাজার টাকা। বিনিময়ে তাকে অনুষ্ঠানে ক্রেষ্ট ও সম্মাননা দেওয়া হয়।
অপর সম্মাননা প্রাপ্ত গণ্ডামারা লবণ উৎপাদনকারী শ্রমজীবী সমবায় সমিতির সেক্রেটারী ও ইসলামিক ফ্রন্ট নেতা মৌলভী বশির। তার কাছ থেকে নেওয়া হয় ২০ হাজার টাকা।
তাছাড়া বাণীগ্রাম সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির কাছ থেকে নেওয়া হয় ১০ হাজার টাকা। অন্যান্য প্রতিটি সমিতির কাছ থেকেই নির্ধারিত হারে চাঁদা আদায় করে উপজেলা সমবায় অফিস। অনুষ্ঠানের ব্যানার, সরবরাহ করা ক্যাপ এবং টি-শার্টেও বিভিন্ন ‘সমিতির নাম’ ও ‘সৌজন্যে লেখা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উত্তর-পশ্চিম গণ্ডামারা লবণ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা আবু আহমদ জানান, আমি সমবায় অফিসারের অনুরোধে টি-শার্ট সরবরাহ করেছি। অনুষ্ঠানে খরচের জন্য নিজ উদ্যোগে শরীক হয়েছি। আমাকে টাকা দিতে বাধ্য করেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সমবায় সমিতির এক কর্মকর্তা জানান, অনুষ্ঠানে সমবায় সমিতির দায়িত্বশীল ও সমবায়ীদের বক্তব্য রাখার কথা থাকলেও জামায়াত সমর্থিত শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মাত্র একজন এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত সমর্থিত ইনলামী ফ্রন্টের একজনকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ প্রদান করা হলেও বিএনপি সমর্থিত কাউকে বক্তব্য রাখতে দেওয়া হয়নি। ক্রেষ্ট ও সম্মাননা প্রদানের ক্ষেত্রেও বৈষম্য হয়েছে বলে দাবি করে ওই সমবায়ী জানান, যারা বেশি টাকা দিয়েছে তাদের বক্তব্য রাখতে দেওয়া হয়েছে এবং তাদেরকেই সম্মাননা ক্রেষ্ট দেওয়া হয়েছে। এমনকি জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় জাতীয় সংগীত বাজানোর মাঝপথে মাইক বন্ধ হয়ে যায়। এনিয়ে অবশ্যই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ জামশেদুল আলম দুঃখ প্রকাশ করেন।উল্লেখ্য, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ওবায়দুল হক বিগত মাস দুয়েক আগে বাঁশখালীতে যোগদান করেন। এর আগে গাজী ওমর ফারুক দীর্ঘদিন ধরে বাঁশখালীতে সমবায় কর্মকর্তা পদে ছিলেন।এ প্রসঙ্গে বাঁশখালী উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ওবায়দুল হক জানান, আমি বাঁশখালীতে নতুন এসেছি। অনেককে আমি এখনো চিনিনা। তাছাড়া প্রোগ্রাম উপলক্ষে কারো কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন সমিতি নিজ উদ্যোগে খাবার, টি-শার্ট ও ক্যাপ উপহার দিয়েছে। এর বাইরে অভিযোগ সত্য নয়।সমবায় দিবসের র্যালী শেষে আলোচনা সভা উপজেলা পরিষদের হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ওবায়দুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও র্যালীতে প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জামশেদুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ ওমর সানী আকন, বাঁশখালী থানার ওসি সাইফুল ইসলাম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ছরওয়ার হোসাইন চৌধুরী প্রমুখ। এতে বক্তব্য রাখেন, গণ্ডামারা লবণ উৎপাদনকারী শ্রমজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সেক্রেটারী মৌলভী বশির, উত্তর পশ্চিম গণ্ডামারা লবণ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সেক্রেটারী ওসমান গণি, রায়ছটা প্রেমাশিয়া বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, ফরিদ আহমদ, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শওকতুজ্জমান, খানখানাবাদ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, শীলকূপ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাশেদ নুরী প্রমুখ।এনআই
Sunday 2 November 2025
somoyerkonthosor - 16 hours ago
চাঁদা তুলে বাঁশখালীতে সমবায় দিবস পালন, সম্মাননায়ও বৈষম্যের অভিযোগ!
⁞
